রাজু দত্ত ।।
কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ে চলছে জনবল সংকট। ৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন। এতে কাজ করতে ভোগান্তি পোহাচ্ছে কার্যালয়টি। কর্মকর্তা-কর্মচারী সংকটে মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
শূন্য পদগুলো হলো- সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, একাডেমি সুপারভাইজার, অফিস সহায়ক ও হিসাব রক্ষক। এসব পদে লোকবল না থাকার কারনে শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে পড়ছে এর প্রভাব।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরে কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংকটে রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত। এতে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে নেমে এসেছে স্থবিরতা। লোকবলের অভাবে শিক্ষার গুনগত মান উন্নয়নে নিয়মিত বিদ্যালয় পরিদর্শন ও মনিটরিং কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এ উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের অধীনে ২৩ টি মাধ্যমিক, ৬ টি জুনিয়র স্কুল, ৬ টি মাদ্রাসা ও ৪ টি কলেজ রয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এ দপ্তরটিতে ৭টি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৩ জন। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (সহকারী) পদটি কয়েক বছর থেকে শূন্য। বর্তমানে একাডেমিক সুপারভাইজার ডেপুটেশনে নরসিংদি জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে কর্মরত আছেন। তবে তিনি বেতন ভাতা ভোগ করেন কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক অফিস থেকে। এছাড়া আরেকজন রয়েছেন অফিস সহায়ক ও নাইট গার্ড। বাকি পদগুলো শূন্যই রয়েছে দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত।
জানা গেছে, শূন্য পদগুলো পুরণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হলেও কোনো ফল হয়নি।
কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি সত্যেন্দ্র কুমার পাল জানান, ‘বেতন-ভাতাসহ স্কুলের বিভিন্ন কাজে তাদেরকে প্রায়ই শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। কিন্তু শিক্ষা অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা লাগে। ফলে স্কুলে পর্যাপ্ত সময় দিতে না পারায় ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার বিঘ্ন ঘটছে। দ্রুত সময়ের ভিতরে শুন্য পদ পুরনের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
উপজেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক কাজল জানান, ‘অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার ও হিসাব রক্ষক পদগুলো শূন্য থাকায় তিনি একাই এ দপ্তরের সব কাজ পরিচালনা করছেন। এতে অফিসে আসা শিক্ষকদের ভোগান্তিতে পড়াসহ কার্যক্রম চালিয়ে নিতে তাকে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমি আগামী জানুয়ারী মাসে চলে যাব অবসরে। তখন আরও সমস্যায় পড়বে হবে মাধ্যমিক অফিস।’
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, ‘প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে দাপ্তরিক কাজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরণের সভায় যোগ দিতে হয়। তারপরও সবকিছু সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শূন্য হয়ে থাকা পদ পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’
জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ফজলুর রহমান মোটোফোনে এ প্রতিবেদকে বলেন, ‘এসব শূন্যপদগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমাদের করার কিছু নাই। এ জেলার অনেক অফিসে এসমস্যা আছে। মাউশি আমাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে শূন্য পদগুলোর। আশা করছি দ্রুত সময়ের ভিতরে সমাধান করবেন।’